শনিবার, ৪ জুলাই, ২০১৫

রোজা রেখে রক্তদান করলে কি রোজা ভেঙে যায়?


Ans. by: Masum Billah Sunny
আমাদের অনেকে মধ্যে একটা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যে রোজা রেখে রক্ত দিলে নাকি রোজা ভেঙে যায়। এটা আসলে কুসংস্কার।


★ হাদীস শরীফ মোতাবেক শরীয়তের সাধারণ উসুল হলো “শরীরের ভিতর থেকে কোন কিছু বের হলে ওযূ ভঙ্গ হয় এবং বাইর থেকে কোন কিছু শরীরের ভিতরে প্রবেশ করলে রোজা ভঙ্গ হয়।”

★ রোজার ব্যাপারে ইমাম আযম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি–এর যে উসুল, অর্থাৎ “বাইরে থেকে রোজাবস্থায় যে কোন প্রকারে বা পদ্ধতিতে শরীরের ভিতর কিছু প্রবেশ করলে, যদি তা পাকস্থলী অথবা মগজে প্রবেশ করে, তবে অবশ্যই রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।”




শারীরিকভাবে সমর্থ হলে রোজা রেখে রক্ত দিতে কোনো অসুবিধা নেই।

রক্ত দিলে রক্ত বের করা হয় তা সেলাইন বা সিরিঞ্জ এর মাধ্যমে ।

প্রশ্ন হল  রক্ত বের  হলে/করলে রোজা ভাঙবে কিনা?

এই জবাবে যুক্তি দেয়া যায় রোজা রাখা অবস্থায় শিংগা লিগিয়ে দু:ষিত রক্ত বের করে চিকিৎসা সম্পর্কিত হাদিস সমুহ :-



★ জামে তিরমিজী এর ৮/ সাওম (রোজা) অধ্যায় হতে হাদিসের মানঃ - ৭৭৩ বিশর ইবনুূু হিলাল আল-বাসরী (রহঃ) ইবনুূু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম এবং সিয়াম অবস্থায়ও শিংগা লাগিয়েছেন। ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি সহীহ।

★ জামে তিরমিজী এর ৮/ সাওম (রোজা) অধ্যায় হতে হাদিসের মানঃ - ৭৭৪ আবূ মূসা মুহাম্মদ ইবনুূু মূসান্না (রহঃ) ইবনুূু আব্বাস (র:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছেন। ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই সনদে হাদীসটি হাসান-গারীব।


★ জামে তিরমিজী এর ৮/ সাওম (রোজা) অধ্যায় হতে হাদিসের মানঃ - ৭৭৫ আহমাদ ইবনুূু মানী (রহঃ) ইবনুূু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা ও মদীনার মাঝে ইহরাম এবং সিয়াম অবস্থায় শিংগা লাগিয়েছেন। এই বিষয়ে আবূ সাঈদ, জাবির ও আনাস (রাঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।

★ ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, ইবনুূু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। কতক সাহাবী ও আলিম এই হাদীস অনুসারে অভিমত গ্রহণ করেছেন। তাঁরা সাওম পালনকারীর জন্য শিংগা লাগানোতে কোন দোষ আছে বলে মনে করেন না। এ হল ইমাম সুফিয়ান সাওরী, মালিক ইবনুূু আনাস ও শাফেঈ (রহঃ) এর অভিমত।

★ আবূ বকর ইবনুূু আবূ শায়বা, যূহায়র ইবনুূু হারব ও ইসহাক ইবনুূু ইবরাহীম (রহঃ) ইবনুূু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্হায় শিংগা লাগিয়ে ছিলেন।
(মুসলিম ২৭৫৬)

★ আবূ বকর ইবনুূু আবূ শায়বা (রহঃ) ইবনুূু বুহায়না (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্হায় মক্কায় যাওয়ার পথে নিজের মাথার মধ্যস্হলে শিংগা লাগিয়েছিলেন।
(মুসলিম ২৭৫৭)

★ হযরত আকরামা (রা) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, ‘নবী করিম (স) হজের জন্যে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শরীর থেকে শিংগার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন এবং রোজা অবস্থায়ও শরীর থেকে শিংগার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন।’

★ হযরত সাবিত আল বানানী থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, ‘হযরত আনাস বিন মালেক (রা)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, রোজাদারের জন্যে শিংগা লাগিয়ে শরীর থেকে রক্ত বের করাকে আপনি কি অপছন্দ করেন? জবাবে তিনি বলেন, না আমি অপছন্দ করি না। তবে দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় থাকলে ভিন্ন কথা।’ (সহীহ আল বোখারী ১:২৬০)

★ একইভাবে শিংগা লাগানোও অপছন্দ নয়। অর্থাৎ দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় না থাকলে রোজা অবস্থায়ও শিংগা লাগিয়ে রক্ত বের করা যায়। [শামী কিতাব ২:৩৯৯]

★ রোজা অবস্থায় তেল ও সুগন্ধী ব্যবহার করলে রোজা ভাঙেনা। একইভাবে শিংগা লাগালেও রোজার ক্ষতি হয় না। [হেদায়া কিতাব ১:২১৭]



এটাও জেনে রাখা ভাল -

★★★ শিংগা কি? শিংগা লাগালে কি গোসল করতে হয়?

জবাব ১:

★ শিংগা হলো গরু বা মহিষের শিং দিয়ে তৈরি বিশেষ এক রকম নল যা দিয়ে মানবদেহের দুষিত রক্ত, পুঁজ বের করা হতো দেহকে ব্যথামুক্ত করার জন্য।

জবাব ২ : জ্বি হ্যা।

★ সুনানে আবু দাউদ এর ১/ পবিত্রতা অধ্যায় হতে হাদিসের মানঃ - ৩৪৮। উছমান ইবনুূু আবূ শায়বা আবদুল্লাহ্ ইব্নুয-যুবায়ের (রাঃ) থেকে আয়িশা (রাঃ) -র সূরে বর্ণিত। তিনি (আয়শা) তাকে ইবনুূু যুবায়ের) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চারটি কাজের জন্য গোসল করতেন- স্ত্রী সহবাসের পর, জুমুআর দিন, শিংগা লাগানোর পর এবং মৃত ব্যক্তির গোসল দেওয়ার পর (তা ছাড়াও তিনি ইহ্রাম, কা’বায় প্রবেশের পূর্বে ও অন্যন্য কাজের জন্যও গোসল করতেন।)

তাই মুমুর্ষ রোগীকে রক্ত দেয়া পুন্যের কাজ যদি নিজের ক্ষতি না হয় শক্তিশালী হয় তবে পারবে।

কারন রক্ত দিলে পানি পিপাসা পায়। অনেকে মাথা ঘুরে পরেও যায়। তখন কাযা করলে সেটা ১টা রোজা পরে রাখতে হবে। আর যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে ভাংগে তবে ৬০টা রোজা একাধারে রাখতে হবে ১টা মধ্যে ভেংগে গেলে পুনরায় ১ থেকে ৬০ টা রাখতে হবে।
আল্লাহ ভাল জানেন।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Who was the Father of ibrahim? ইব্রাহীম (আ) এর পিতা কে ছিলেন?

The Prophet Ibrahim (may Allah’s peace and blessings descend upon our Prophet Muhammad and upon him and both their families) was the son of ...