মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫

মানব ভ্রুন বিকাশ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের বর্ননাঃ

ভ্রুণবিজ্ঞানীগণ ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে এই বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন কেবল কয়েক বছর পূর্বে। আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওপর বহু শতাব্দী পূর্বে এমন সূক্ষ্ম ও সুনির্দিষ্ট তথ্য অবতীর্ণ করতে পারেন? 

```আর অবশ্যই আমি (আল্লাহ) মানুষকে মাটির নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি। 

→ অতঃপর (ছুম্মা) আমি তাকে শুক্ররূপে (নুতফা) সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। 
→ তারপর (ছুম্মা) আমি ‘নুতফা’ কে ‘আলাকা’য় (রক্তপিন্ড) পরিণত করি (খালাকনা)। 
→ অতঃপর (ফা) আমি আলাকাকে ‘মুদগা’য় (গোশতপিন্ডে) পরিণত করি। 
→ অতঃপর (ফা) মুদগাকে ‘ইযামে’ (হাড়ে) পরিণত করি। 
→ অতঃপর (ফা) ‘ইযাম’ কে ‘লাহম’ (মাংসপেশী) দ্বারা আবৃত করি।
→  তারপর (ছুম্মা) আমি ‘আনশা’নাহু’ (তাকে গড়ে তুলি) অন্য এক সৃষ্টিরূপে। 

অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত বরকতময়!``` (মুনিনুন, ২৩ : ১২-১৪) 


উল্লেখ্য যে, এই আয়াতে কোরান মাজিদ দু’টি ভিন্ন সংযোজক অব্যয় তথা ‘ফা’ ও ‘ছুম্মা’ ব্যবহার করেছে। অধিকাংশ অনুবাদের ক্ষেত্রে উভয়টির একই অর্থ করা হয়েছে। অথচ পূর্বে যেমনটি উল্লেখিত হয়েছে ‘ফা’ অব্যয়টি অব্যবহিত পরে অর্থ বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। পক্ষান্তরে ‘ছুম্মা’ অব্যয়টি ব্যবহৃত হয় বিলম্বিত পরম্পরা বুঝানোর জন্য। কোরান মাজিদ উপরোক্ত আয়াতে ‘ছুম্মা’ অব্যয়টি কেবল তিনবার ব্যবহার করেছে। যা নির্দেশ করে, ভ্রূণের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনটি স্বতন্ত্র পর্যায় রয়েছে। ভ্রুণবিজ্ঞানীগণ ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে এই বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন কেবল কয়েক বছর পূর্বে। আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওপর বহু শতাব্দী পূর্বে এমন সূক্ষ্ম ও সুনির্দিষ্ট তথ্য অবতীর্ণ করতে পারেন? কোরান মাজিদ ভ্রুণ বিকাশের স্তরগুলিকে নির্দেশ করার জন্য তিনটি সুনির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার করেছে। নিচে তুলে ধরা হল : 

একঃ

‘নুতফা’ : এটি বিকাশের প্রথম ধাপকে নির্দেশ করে এবং এই ধাপটি পুরুষ ও নারীর বীর্য মিলন থেকে মায়ের জরায়ুতে জাইগোট সৃষ্টি হওয়া পর্যন্ত পুরো বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। এ ধাপে আন্তকোষীয় জাইগোট বিভাজিত হওয়া শুরু করে এবং একটি অধিকতর জটিল রূপ ধারণ করে।

দুইঃ

‘খালাক্বনা বা তাখলিক : এটি ভ্রূণ বিকাশের দ্বিতীয় ধাপ। এটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সৃষ্টির স্তর। যা শুরু হয় তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এবং শেষ হয় গর্ভধারণের অষ্টম সপ্তাহে। এই ধাপে কোষ বিভাজন আরো ত্বরান্বিত হয় এবং মানব অঙ্গসমূহ ও বিভিন্ন তন্ত্রের পার্থক্য পরিষ্কার হয়। তিন. ‘আনশা’না বা নাশআ : এটি ভ্রূণবিকাশের তৃতীয় ও সর্বশেষ স্তর। এই ধাপে দ্রুত কোষ বিভাজন, পৃথকীকরণ ও বৃদ্ধি সাধন একটি সুনির্দিষ্ট মানব আকৃতি গঠন করে, যাকে বলা হয় ভ্রূণ। 

ধাপটি শুরু হয় গর্ভধারণের নবম সপ্তাহ থেকে এবং শিশু ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এসব ধাপের প্রত্যেকটি অঙ্গসংস্থান ও শরীরতাত্ত্বিক বিভিন্ন পরিবর্তনের একটি জটিল প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে অতিবাহিত হয়। এই পরিবর্তনগুলি হয় দ্রুত, কিন্তু একটি থেকে অপরটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট। কোরান মাজিদ এসব উপধাপকে সুনির্দিষ্ট শব্দে ‘ফা’ সংযোজক অব্যয় সহকারে বর্ণনা দিয়েছে, যা দ্রুত ও তাৎক্ষণিক পরিবর্তন নির্দেশ করে। আগত পৃষ্ঠাগুলি এ কথা পরিষ্কার করে দিবে যে, ভ্রূণবিকাশের এসব উপধাপ বর্ণনার ক্ষেত্রে কোরান মাজিদের শব্দসমূহ অধিক ব্যাপক ও যথোপযুক্ত। 

এভাবে কোরান মাজিদের প্রতিটি পরিভাষাই একথা ঘোষণা করে যে, মানব ভ্রূণবিদ্যা মহানবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি জীবন্ত মুজিঝা এবং স্বয়ং কোরান মাজিদের জন্যেও তা মুজিঝা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Who was the Father of ibrahim? ইব্রাহীম (আ) এর পিতা কে ছিলেন?

The Prophet Ibrahim (may Allah’s peace and blessings descend upon our Prophet Muhammad and upon him and both their families) was the son of ...