শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

সামা ও ওরুশ সম্পর্কে দেওবন্দী আলেমদের পীর হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজ্জিরে মক্কী (রহঃ) এর ফতোয়াঃ







আমরা সকলে হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজের এ মক্কি (রহ) কে মান্য করি । এমন কি দেওবন্দিদের পীর আশরাফ আলী থানভী সাহেব , রশিদ আহমেদ গাংগুহী সাহেব , কাশেম নানুতভী সাহেব , খলিল আহমেদ আম্ভাটভী সাহেবের ও পীর হচ্ছেন হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজের এ মক্কি (রহ) ।

আমি হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজের এ মক্কি (রহ) এর কিতাব ( ফায়সালা এ হাফতে মাসায়েল ) থেকে সম্পুর্ণ বর্ননা তুলে ধরতেছি । 

তিনি লিখেছেন যেঃ- ওরশ শব্দটি এই হাদিস থেকে নেয়া হয়েছে ( تم كنو مة العروس) মিত্তুর পরে নেক বান্দাদের কে বলা হবে বরের মত শুয়ে পড়। নেক বান্দাদের বেলায় মিত্তু হল মাহবুবে হাকিকির সাথে মিলনের নাম । এ জন্যই তাদের মিত্তু কে বেসাল বা মিলন বলা হয় । মাহবুবে হাকিকির সাথে মিলনের চেয়ে আনন্দের বিষয় আর কি হতে পারে ? 
ওরশের প্রথা চালু করার উদ্দেশ্য ছিল মৃত বেক্তির রুহের প্রতি ইসালে সওয়াব করা , যা খুবই পছন্দনিয় কাজ । যে সব পূর বুযুর্গ থেকে আমরা ফয়েয বরকত লাভ করেছি , এ ব্যাপারে আমাদের উপর তাদের অধিক হক রয়েছে । আর ওরশে পীর ভাইদের সাহিত মেলা মেশার দরুন মিল মুহাববাত ও ভ্রাতত্ববোধ বৃদ্ধি পায় ও বরকতময়ও । আর এসব ওরশে অনেক পীর মাসায়েখ একত্রিত হয় হলে পীর খুঁজে পাওয়া ও সহজ হয় ও নিজের পছন্দনিয় পীরের কাছে মুরিদ হওয়া ও সহজ হয় । এভাবে এক সিলসিলার সকল লোক একত্রিত হয় একে অন্যের সাথে সাক্ষাত্কার সুযোগ ও ঘটে ও সাহেব এ মাযার এর প্রতি কোরান তিলাওয়াত খাবার বন্ঠনের সওয়াব ও পৌছানো হয় । 
এ মহৎ উদ্দেশ্য একটা নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারিত হয় । এখন প্রশ্ন হচ্ছে মিত্তুর দিল কে কেন ওরশের দিন নির্ধারণ করা হয় ? এর পিছনে কিছু রহস্য লুকায়িত আছে তা প্রকাশের দরকার নাই ( ফায়সালা এ হাফতে মাসায়েল) পৃষ্টা নং ১৫৭-১৫৮ 



পরের প্রসঙ্গ সামাঃ-

সামার বিষয়ে বাজি ইমদাদুল্লাহ মুহাজের এ মক্কি (রহ) ফায়সালা এ হাফতে মাসায়েল কিতাবে লিখেছেন যে ;- কয়েক সিলসিলায় সামার প্রচলন আছে । তাদের তাদের ওরশে জওক ও শওক বৃদ্ধি করার অভিপ্রায়ে সামা করে থাকে । একে মিল ওরশের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর কিছু দেখি না । বরং কতিপয় ওলামা কেরাম হাদিসের দ্বারা সামা কে বৈধ প্রমান করেছেন । 

একটু হাদিস দ্বারা কতিপয় সন্দেহের উদ্রেগ হয় তা হল নবী (সা) বলেছেন , আমার কবর কে মেলায় পরিনত কর না । এ হাদিসের সঠিক অর্থ হল কবরের কাছে মেলা বসানো সাজ সজ্জা করা ধুম পানের আসর বসানো নিষেধ । কেননা কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য হল মিত্তু পরকালের স্বরণ করা আনন্দ আহ্লাদ করা নয় । 

উপরোক্ত হাদিসের অর্থ এ নয় যে কবরের পাশে একত্রিত হওয়া নিষেধ । 
তা হলে ও যিয়ারতের জন্য বের হওয়া কাফেলা সমুহ মদিনা তাইয়েবা যাওয়া নিষেধ হতো। প্রমানিত হলে যে ওরশ উপলক্ষে একত্রিত হওয়া নিষেধ ও না যায়েয মনে করা ভুল । 
সারকথা হল কবর যিয়ারত একাকি বা দলবদ্ধভাবে যাওয়া উভয় যায়েয ও কোন কারন বশত দিন নির্দিষ্ট করা ও যায়েয । 

সামা স্বয়ং একটি বিতর্কিত মাসয়ালা । তালযন্ত্র (বাদ্যযন্ত্র) বিহিন সামা ও বিতর্কিত । কিন্তু মুহাক্কিক ওলামায়ে কেরামের অভিমত হল যদি যায়েযের শর্ত সমুহ পাওয়া যায় ও ফেতনা ফ্যাসাদমুলক কোন কিছু না থাকে তা হলে যায়েয , নতুবা নাযায়েজ । এ নিয়ে ইমাম গাজালী (রহ) এর ইউয়ুয়ায়ে উলুমুদ্দিন কিতাবে বিস্তারিত বর্ননা আছে । 

বাদ্যযন্ত্র সহকারে সামার বিষয়ে ও মতভেদ আছে । কতক আলেম ওই সব হাদিস তুলে ধরেছেন যেগুলোতে বাদ্যযন্ত্র নিষেধ বোঝা যায় ও এ ব্যাপারে ফিকাহর দলিল পেশ করেছেন । কাজী সানাউল্লাহ পানিপথী (রহ) এ নিয়ে তার (সামা) পুস্তিকায় আলোচনা করেছেন । তবে এ ব্যাপারে সবাই একমত সে সামার আদব ও শর্ত সমুহ থাকতে হবে ।
তবে আজকাল অধিকাংশ সামা মাহফিলে এসব শর্ত পালন করা হয় না । 

যাহোক সামা সম্পর্কে হাদিস সমুহ একক রেবায়েত ক্ষত ।ফলে এগুলোর তাবির সম্ভব । তাছারা এসব লোক নিজের অবস্খার পরিপ্রক্ষিতে সামা করতে বাধ্য । এরুপ অবস্থিত কারো প্রতি আপত্তি করাটা বড়ই দুষ্কর ।

এ বিষয়ে আমার নীতি হচ্ছে যে ,আমি প্রতি বছর আমার পীর মুরশিদের রুহের প্রতি ইসালে সওয়াব করে থাকি । প্রথমে কোরান তিলাওয়াত করা হয় ও সময় থাকলে মিলাদ শরিফ ও পাঠ করা হয় ও সর্বশেষ খাবার বন্ঠন করা হয় ও সওয়াব পীর মুরশিদের রুহের প্রতি বখশিষ করে দেওয়া হয় । এর বেশি আমি কোন কিছু করি না । বাদ্যযন্ত্র সহকারে বা বাদ্যযন্ত্র বিহিন কোন সামার অনুষ্টান আমার এখানে হয় না ।

তবে সামা কারীদের প্রতি আমার কোন আপত্তি ও নাই ।
তবে প্রদর্শনী মুলক সামা দুষনিয় । কিন্তু কোন শরয়ী দলিল বিহীন কাউকে তোষামদকারী বলে ফেলা সঙ্গত নয় । এ ক্ষেত্রে ইভয় দলের তাই রা উচিত যা আগে বলা হয়েছে । অর্থাৎ যারা ওরশ ও সামা করে না তারা সুন্নাতের পরিপূর্ন অনুসারী মনে কর , আর যারা সামা ও ওরশ করে তাদের কে আহলে মুহাব্বাত (সুফি ) মনে কর । একে অন্য কে অস্বীকার কর না এবং সাধারান লোকদের বাড়াবাড়ি কে শান্ত ও সহজ ভাবে প্রতিরোধ করার চেষ্টা কর ।
(ফায়সালা এ হাফতে মাসায়েল ) ১৬০ নম পৃষ্টা ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Who was the Father of ibrahim? ইব্রাহীম (আ) এর পিতা কে ছিলেন?

The Prophet Ibrahim (may Allah’s peace and blessings descend upon our Prophet Muhammad and upon him and both their families) was the son of ...